ভাব সম্প্রসারণ: পথ পথিকের সৃষ্টি করে না, পথিকই পথের সৃষ্টি করে

পথ পথিকের সৃষ্টি করে না, পথিকই পথের সৃষ্টি করে।

ভাব সম্প্রসারণ, Expansion of Thought
মূলভাব: মানুষের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এবং প্রয়োজনেই সৃষ্টি হয়েছে হাজারো পথের। এ সৃষ্টিতে পথের কোনো কৃতিত্ব নেই, সবটুকু কৃতিত্ব পথিকের। পথ না থাকলেও পথিক আসত এবং স্বীয় প্রয়ােজনে সে পথের সৃষ্টি করতো।
সম্প্রসারিত ভাব: পথিক জীবনচক্রে আবর্তনকারী মহা জীবনের রথ। সে গতির প্রতীক। পথিকের পদচিহ্নে অঙ্কিত হয় পথরেখা। এই পথের নির্মাতা বা স্রষ্টা মানুষ নিজেই। কৃতী মানুষ তার জীবনের গতিময় পথ নিজেই সৃষ্টি করে নেয়। অপরের সৃষ্ট পথ তার জন্য অনুসরণযোগ্য নয়। নিজের সাধনা ও কর্মকুশলতার সহায়তায় মানুষকে এগিয়ে যেতে হয় নিজের পথের সন্ধান করে। মানুষকে নানা অজানা অধ্যায় অতিক্রম করার জন্য নিত্য-নতুন পথ তৈরি করতে হয়। বাঁধা পথে সফলতার সম্ভাবনা নেই বলে, উদ্যোগী পথিক তার গন্তব্যে পৌছানোর জন্য নিজেই পথের সৃষ্টি করে নেন। তার সৃষ্ট পথই তাকে নতুন দিগন্তের সন্ধান দেয়।পথ তৈরি হয়েছে পথিকের অগ্রগমনের জন্য। যাত্রা যাতে সহজতর হয় সেদিকে লক্ষ রেখেই পথের সৃষ্টি। কিন্তু এ পথই যে জীবনের গন্তব্যে পৌছে দেবে এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই। জীবনের লক্ষ্য অর্জনের জন্য পূর্বপ্রতিষ্ঠিত পথ সহায়ক নাও হতে পারে।গতানুগতিক পথে চললে জীবনের প্রাপ্য অনেক সময় সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে। তাই সে পথ পরিহার করে নতুন পথের খোঁজ করতে হবে। জাবনসন্ধানী পথিকের পথ হয় স্বতন্ত্র, সে তার সাধনা দিয়ে নতুন পথ তৈরি করে নেয়। যে মানুষ নতুন পথের খোঁজ পায় তার পক্ষে জীবনকে অর্থপূর্ণ ও সফল করে তোলা সম্ভব হয়। তাই বাধা পথে চলে জীবনকে সফল করা যায় না। কালে- কালান্তরে মানুষ দেশ-দেশান্তরে সমাজ ও সভ্যতার অজস পথ তৈরি করেছে। নতুন পথের সন্ধান করে পথ তার করা আবশ্যক। তবেই জীবন ধন্য হবে। সাথক হবে, জীবনে সফলতা আসবে।
মন্তব্য: মহাজ্বানী মহাজনেরা যে পথ সৃষ্টি করে অমর হয়ে আছেন সে পথ মানুষের সামাজিক কল্যাণের আলোকবর্তিকা। মানুষকে নিজের প্রয়োজনে পথ সৃষ্টি করে নিতে হয়, এসত্য মহাজ্ঞানী মহাজনরা প্রতিষ্ঠিত করেছেন।


Post a Comment

Previous Post Next Post