সবক্ষেত্রেই একটি মৌলিক ঐক্য লক্ষ করা যায়। আর তা হলাে নবজন্ম বা পুনরুজ্জীবনের
ধারণা। বাংলা নববর্ষ 'পয়লা বৈশাখ' বাঙালির সর্বশ্রেষ্ঠ সাংস্কৃতিক উৎসব। কৃষিনির্ভর
এদেশে ফসল উৎপাদনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রক্ষা করে প্রাচীনকাল হতেই বাংলা নববর্ষের
ধারণা তৈরি হয়। এ উৎসব একা হিন্দু বা মুসলমানের নয়। এ উৎসব বাংলা ভাষাভাষী
এবং বাংলাদেশে বসবাসকারী সকল মানুষের। ধর্মীয় সংকীর্ণতার বৃত্ত অতিক্রম করে বাংলা
নববর্ষ আজ বাঙালি জাতীয় চৈতন্যের ধারক। বাংলা নববর্ষ বা পয়লা বৈশাখ আমাদের
জাতীয় জীবনে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । আবহমান বাঙালি সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য
অংশ বাংলা নববর্ষ। এর ঐতিহ্য সুপ্রাচীন ও গৌরবমণ্ডিত। কালের যাত্রাপথ ধরে এর
উদযাপনরীতিতে নানা পালাবদল ঘটলেও উৎসবটি রয়ে গেছে আগের মতােই জনপ্রিয়।
সার্বজনীন এ উৎসব পালনের মধ্য দিয়ে সারা দেশে অভিন্ন সাংস্কৃতিক রূপটিই মূর্ত হয়ে
ওঠে। এভাবে নববর্ষ উৎসব বাঙালির ধর্ম-নিরপেক্ষ চেতনাকে অপরাজেয় শক্তি ও মহিমায়
পূর্ণ করে তােলে। বিশ শতকের প্রথমার্ধে এ উৎসব উদযাপনকে কেন্দ্র করে জাতীয়তাবাদী
অনুষঙ্গের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল সাম্রাজ্যবাদবিরােধী চেতনা। এ দিনে সকল বাঙালি আপন
সংস্কৃতির চর্চায় যুক্ত হয়ে মেতে ওঠে উৎসবে। পুরাতন সব জীর্ণতাকে দূর করে নতুনকে
বরণের মধ্য দিয়ে শুরু হয় নতুন জীবন।
Post a Comment