রচনা: ঈদ উৎসব বা ভ্রাতৃত্ব বন্ধনে ঈদ

☆ ঈদ উৎসব
☆ ভ্রাতৃত্ব বন্ধনে ঈদ
☆ মুসলিম জাতির বড় ধর্মীয় উৎসব

রচনা ঈদ উৎসব বা ভ্রাতৃত্ব বন্ধনে ঈদ, essay on eid celebration, composition on eid-ul-fitr, eid-ul-adha
    এক নজরে সঙ্কেতন:
  1. উপস্থাপনা
  2. ঈদের সংজ্ঞা
  3. ঈদের প্রকারভেদ
  4. ঈদ-উল-ফিতর
  5. ঈদ-উল-আযহা
  6. ঈদের শিক্ষা
  7. ঈদের গুরুত্ব ও তাৎপর্য
  8. উপসংহার
  9. উপস্থাপনা: কবি গোলাম মোস্তফার কথায়-
    এনেছে নব-গীতি, এনেছে সুখ-স্মৃতি, এনেছে প্রেম-প্রীতি-পুণ্য,
    এনেছে নব-আশা, একতা ভালোবাসা, নিবিড় মিলনের জন্য,
    ভ্রাতৃ-প্রণয়ের মহান দৃশ্য !
    মিলন-কলগানে মুখর বিশ্ব !
    বিভেদ-জ্ঞান যতো আজিকে সব হত
    ধন্য ঈদ তুমি ধন্য !
    ঈদ নিয়ে আসে মুসলিমদের জন্য খুশির জোয়ার। প্রত্যেক দেশের মানুষরা ঈদের দিনটি অনেক ভিন্ন ভাবে পালন করে থাকে। ঈদ পুরো বিশ্বের মুসলিমদের জন্য অনেক বড় স্পেশাল দিন ।

    ঈদের সংজ্ঞা: ঈদ আরবি ভাষার শব্দ। যার অর্থ আনন্দ, খুশি ও বার বার ফিরে আসা। ঈদ হলো মুসলিমদের জন্য সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ।

    ঈদের প্রকারভেদ: ঈদ দুই প্রকার। যথা: ১. ঈদ-উল-ফিতর, ২. ঈদ-উল-আযহা।

    ঈদ-উল-ফিতর: ঈদ মুসলমানদের একটি উৎসব । এটা বছরে দু’বার হয়ে থাকে । একটি রমজান মাসের শেষে এবং অন্যটি ১০ জিলহজ্ব তারিখে আনুষ্ঠানিক ভাবে এটিকে বলা হয় ঈদ-উল-ফিতর । রমজান ইসলামী বছরের নবম মাস । মুসলমানরা পুরো মাস রোজা রাখে । রমজান মাস শেষে তাদের বাধঁ ভাঙ্গা আনন্দ হয় । প্রত্যেক মুসলিম তার আয়ের কিছু অংশ দরিদ্র এবং অসহায়দের মধ্যে ফিতরা হিসেবে বিতরণ করে । শাওয়াল মাসের ১ম দিন সকালে প্রত্যেক মুসলমান-যুকক, বৃদ্ধ, ধনি, দারিদ্র- সকলেই গোসল করে । তারা তাদের সবচেয়ে ভাল পোশাক পরিধান করে এবং জামাতে নামাজ পড়ার জন্য ঈদ গাহে যায় । নামায শেষে ইমাম খুতবা পড়েন এবং ছোটখাটো কথা বলেন । কথা শেষ হওয়ার পর তারা একে অন্যকে আলিঙ্গন করে এবং সকল খারাপ অনুভূতি এবং শত্রূতা ভুলে যায় । তারা তাদের নিজ নিজ গৃহে ফিরে ঐ দিনের জন্য তৈরি করা বিশেষ খাবার খায় । পুরো দিনটিই আনন্দ এবং মজার ভেতর দিয়ে কাটে ।

    ঈদ-উল-আযহা: মুসলমানদের দুটি ধর্মীয় উৎসবের মধ্যে ঈদ-উল-আযহা অন্যতম । ঈদ-উল-আযহা উদযাপনের মধ্য দিয়ে মুসলমানরা নবী ইব্রাহীম (আঃ) এর আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে । তিনি তাঁর প্রিয় সন্তান ইসমাঈল (আঃ) কে সর্বশক্তিমান আল্লাহর নামে উৎর্সগ করতে চেয়েছিলেন । সেদিন থেকে মুসলিমরা এ উৎসবকে একই ভাবে ঈদ-উল-আযহা নামে উদযাপন করে । জিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখ সকালে সকল মুসলমান মাঠে একত্রিত হন এবং জামাতে নামাজ পড়ে । নামাজ শেষে তারা নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে আসে। তারপর তারা আল্লাহর নামে গরু, ছাগল অথবা অন্য প্রাণী কুরবানী করে । তারা তাদের পশুর মাংসের এক অংশ বন্ধু, বান্ধব, আত্মীয়স্বজন এবং দরিদ্র প্রতিবেশিদের মাঝে বিতরণ করে । বাকিটা তারা মেহমান, বন্ধ-বান্ধব ও আত্মীয়দেরকে আপ্যায়নের জন্য রাখে ।

    ঈদের শিক্ষা: ঈদ হলো পাপমুক্তির আনন্দ। সফলতা ও বিজয়ের আনন্দ। এ বিজয় নাফসের ওপর আকলের, এ বিজয় শয়তানের ওপর ইনসানের। মনের সব কালিমা দূর করে, মানুষে মানুষে ভেদাভেদ ভুলে, মান-অভিমান বিসর্জন দিয়ে সবাই হাতে হাত মেলানো, বুকে বুক মেলানো, গলায় গলা মেলানো, অর্থাৎ সবার দেহ-মন এক হওয়ার আনন্দ হলো ঈদের আনন্দ। নিজের মনের হিংসা, ঘৃণা, লোভ, অহংকার, অহমিকা, আত্মম্ভরি, আত্মশ্লাঘা, রাগ-ক্রোধ, বিদ্বেষসহ যাবতীয় কুপ্রবৃত্তি থেকে নিজেকে মুক্ত করার আনন্দ। সাম্য, ভ্রাতৃত্ব ঐক্য, সৌহার্দ্য-সম্প্রীতির আনন্দ।

    ঈদের গুরুত্ব ও তাৎপর্য: আমরা আল্লাহ পাকের একটা বড় ইবাদত পালন করার তৌফিক পেয়েছি বলে আমরা মহাখুশি; তাই তাঁর শোকর আদায় করার জন্য ঈদের দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায় করি। এ জন্যই ঈদের নামাজকে সালাতুশ শুকর তথা কৃতজ্ঞতা প্রকাশের নামাজ বলা হয়। এতে মোমিন বান্দার জন্য আনন্দও আছে, সেই আনন্দ খুশির বহিঃপ্রকাশ করা হয় আরেকটি হুকুম পালন করার মাধ্যমে। ঈদ হলো বিশ্ব মুসলিমের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মহা উৎসব।

    উপসংহার: ঈদ সারা বিশ্বের মুসলমানদের জন্য অনেক বড় উৎসব । এই দুই ঈদে সারা বিশ্বের মুসলমানরা সবাই একত্রে হয়ে থাকে । মুসলিমদের জন্য এই দুটো ঈদ অনেক বড় ধর্মীয় উৎসব । এই দুই ঈদ উৎসবই আমাদেরকে আত্মোৎসর্গ, একতা এবং ভ্রাতৃত্বের শিক্ষা দেয় । এভাবে আমরা উৎসব গুলোকে উৎসাহ এবং জাঁকজমকের সাথে পালন করি ।



Post a Comment

Previous Post Next Post